
শিশু দুজনের ফুফু (কেএস নবীর বোনের মেয়ে) মেহরীন আহমেদ বলেন, ‘বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ওদের বাবা-মা আলাদা থাকতেন। ওরা ওদের বাবার সঙ্গেই দাদার বাড়িতে থাকতো। কিন্তু ওদের বাবার মৃত্যুর পর শিশু দুটি খুব বেশি বিষণ্ন হয়ে পড়ে এবং ওদের মায়ের কাছে কিছুদিন থেকে আবার বাড়িতে ফেরে। কিন্তু তাদের জন্য বাসার গেট খোলা হয়নি। আমরা পরিবার থেকে যোগাযোগ করি। শিশুদের বড় চাচা কাজী রেহান নবীকে ফোন করি। কিন্তু তিনি অসুস্থতার কথা জানিয়ে ওদের পরে বাড়িতে আসতে বলেন। এরপর আমরা ধানমণ্ডি থানাকে বিষয়টি অবহিত করি। পুলিশ এসে তাকে (কাজী রেহান নবী) ফোন করে অনুরোধ করে। এরপর ধানমণ্ডি থানার ওসি (ইকরাম হোসেন মিয়া) আমাদেরকে পরেরদিন আসতে বলেন। কিন্তু শিশু দুটো দেখলো আগেরদিন তারা বাড়ির কম্পাউন্ডে ঢুকতে পারলেও পরেরদিন বাইরের গেটও বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ভেতরে কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর আমরা আবার পুলিশকে জানাই। কিন্তু পুলিশ বললো- আমরা কিছু করতে পারবো না, আপনারা কোর্টের আশ্রয় নেন।’
তিনি আরও জানান, বাড়িটি এখনও কেএস নবীর নামে। সেদিক থেকে দেখলে ওই শিশু দুটিও ওই বাড়ির মালিক। ‘শিশুদের বাবার মৃত্যুর পর তার ব্যাংক-ব্যালেন্স দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারই বড় ভাই রেহান নবী।’
ঘটনাটি নিয়ে রবিবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির একাত্তর জার্নালে একটি প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এসময় অনুষ্ঠানটি প্রচারকালে বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের। এরপর প্রচারিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে তিনি মাঝরাতে হাইকোর্টের বেঞ্চ বসিয়ে আদেশ দেন।
কে. এস. নবীর পরিচিতি:
কাজী শহীদুন নবী (কেএস নবী নামে পরিচিত) একজন বাংলাদেশী আইনজীবী যিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজী শহীদুন নবীর জন্ম তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার ষোলঘর এলাকার কাজী বাড়িতে।
কে. এস. নবীকে ১৯৬১ সালে লন্ডনের লিংকন ইন বারে থেকে ডেকে আনা হয়েছিল। [২] তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল ল’ কলেজের অনুষদ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৬৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে যোগ দেন।
১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মুন্সীগঞ্জ -১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন এবং একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর কাছে হেরেছিলেন। ১৯৯৬-১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৯ সালে তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যার সাথে জড়িত, বিদেশে সরকারী গোপনতথ্য এবং দলিল সরবরাহ ও নারী পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই পুলিশ স্পেশাল ব্রাঞ্চ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পরে তার আইনজীবী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন